আপডেট নিউজ:

দি ডেইলী বার্তা পরিবারের পক্ষ থেকে নতুন বছরের শুভেচ্ছা।

‌পুলিশের গাড়ির লাইসেন্স নেই, নিরাপদ সড়ক কীভাবে হবে?

দারাজের পুরষ্কার, এমন অজানা লিংকে কেউ ভুলেও ক্লিক বা প্রেবেশ কিংবা শেয়ার করবেন।

ব্রাজিলকে হারিয়ে কোপা আমেরিকা শিরোপা জয় আর্জেন্টিনার

সর্বোচ্চ পেশাদারী উৎকর্ষতা অর্জনে মনোযোগ দিন : সেনা সদস্যদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী

বিএনপি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অন্ধ বিরোধিতা করছে: ওবায়দুল কাদের

চুয়াডাঙ্গা পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম খোকন বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন।

রিফাত হত্যা মামলা: মিন্নি, ফরাজি, রাব্বি, সিফাত, হৃদয় ও হাসান এর মৃত্যুদণ্ড। বাকি ৪ আসামি খালাস।

ধর্ষণ মামলায় ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর গ্রেপ্তার

শিরোনাম:

আ’লীগের নেতৃত্বে পরিবর্তনের সুর, পদ ছাড়তে রাজি নন শেখ হাসিনা

আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে পরিবর্তনের সুর পাওয়া যাচ্ছে। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে ভারতে গিয়ে নিরাপদ আশ্রয় নেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।

আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে পরিবর্তনের সুর
আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে পরিবর্তনের সুর

সরকার পতনের পরই আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ শীর্ষ নেতৃবৃন্দ এখনো আত্মগোপনে রয়েছেন এবং তাদের কয়েকজন গ্রেফতার হয়েছেন। নেতাকর্মীদের বিপদের মুখে ঠেলে দিয়ে দলীয় প্রধানের এভাবে দেশ ত্যাগের বিষয়টি ভালোভাবে নিচ্ছেন না দলটির কেন্দ্র থেকে শুরু করে তৃণমূল পর্যন্ত। এ ছাড়া ১৫ আগস্টসহ একাধিকবার পাল্টা বিপ্লবে ব্যর্থ হওয়ার পরই দলটির সব স্তরে এখন নতুন নেতৃত্ব নিয়ে জোরালো আলোচনা চলছে।

শেখ হাসিনার একগুঁয়েমি ও জেদি মনোভাবের কারণে আওয়ামী লীগের চরম বিপর্যয় ঘটেছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে সব পর্যায়ের নেতাকর্মীরা বিপর্যস্ত ও হতাশার মধ্যে রয়েছেন। অনেকেই স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে গেলেও পরিস্থিতি অনুকূলে না থাকায় তাও সম্ভব হচ্ছে না। ফলে পটপরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে দলকে রাজনীতিমুখী হতে গেলে নেতৃত্বের পরিবর্তনের বিকল্প দেখছে না দলটির শীর্ষ নেতাদের উদারপন্থী অংশটি। যদিও দলীয় প্রধানের পদ ছাড়তে এখনই শেখ হাসিনা প্রস্তুত নন বলে শেখ পরিবারের একটি ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা গেছে।

গত ৫ আগস্ট ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পরই শেখ হাসিনার একমাত্র ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, তার মা আর রাজনীতিতে ফিরবেন না। পরে তিনি তার স্টেটমেন্ট পরিবর্তন করেন। যদিও গুম-খুন, হত্যাসহ অতীতের কর্মকাণ্ডে এতই জনঅসন্তোষ তৈরি হয়েছে যে, দেশের কোথাও কোনো মামলা হলেই প্রধান আসামি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছেন শেখ হাসিনা।

তা ছাড়া ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর পল্টনে লগি-বৈঠা দিয়ে মানুষ পিটিয়ে হত্যা, ২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামীর সমাবেশ দমন করতে গিয়ে নির্বিচারে গুলি করে মানুষ হত্যা, ২০১০ সালে পিলখানায় বিডিয়ার হত্যাকাণ্ড এবং চলমান ২০২৪ সালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গণহত্যা চালানোর প্রধান নির্দেশদাতা হিসেবে শেখ হাসিনা রাজনৈতিক আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন। এসব প্রেক্ষাপট মাথায় নিয়ে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা রাজনীতিতে আর ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন বলে মনে করছেন না রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্মোহ সমর্থক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী সম্প্রতি সাংবাদিকদের বলেন, শেখ হাসিনাকে দিয়ে আর রাজনীতি হবে না। তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ও সকালে এক কথা বলেন, বিকেলে আরেক কথা বলেন। এরকম করলে রাজনীতি হয় না। তাকে দিয়েও রাজনীতি সম্ভব না। এর আগে অবশ্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সাবেক স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব:) এম সাখাওয়াত হোসেন আওয়ামী লীগকে পুনর্গঠনের জন্য নতুন নেতৃত্বের কথা বলেন।

দলটির একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, গত ৫ আগস্টের ঘটনায় দলের মহাবিপর্যয়ের পর কিভাবে দলের পুনর্গঠন করা যায়, কিভাবে জনসম্মুখে আসা যায় সেটা নিয়ে অনলাইনে ভিন্ন ভিন্ন ভাবে শীর্ষ পর্যায়ে পর্যালোচনা চলছে। এর মধ্যে নতুন এবং পুরনো দিয়ে দল পুনর্গঠন নিয়ে ভাবছেন নেতারা। শেখ পরিবারের একটি ঘনিষ্ঠ সূত্র বলছে, ১৯৮১ সাল থেকে আজ অবধি আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন শেখ হাসিনা। টানা চারবারসহ মোট পাঁচবার দেশের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন বঙ্গবন্ধুর বড় কন্যা শেখ হাসিনা।
দীর্ঘ এ সময়ে বঙ্গবন্ধুর ছোট কন্যা শেখ রেহানা দল ও সরকারের কোনো পদে আসীন না থাকলেও বড় বড় মেগা প্রজেক্টের আর্থিক বিষয়াদিগুলোতে তিনি প্রভাব খাটাতেন। একই সাথে প্রশাসনের নিয়োগ পদোন্নতির বিষয়গুলো ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার আগ পর্যন্ত সাবেক প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা উপদেষ্টা তারেক আহমেদ সিদ্দিকীর মাধ্যমে শেখ রেহানা দেখভাল করতেন। ফলে বর্তমান প্রেক্ষাপটে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তিনিও দায়িত্ব নিতে আগ্রহী নন।

অবশ্য শেখ হাসিনা সম্মত দিলে তার মেয়ে পুতুলকে দিয়ে দল পুনর্গঠন করার বিষয়টি চূড়ান্ত রূপ নিতে পারে। এই আলোচনায় সাধারণ সম্পাদকের তালিকায় রয়েছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফর উল্লাহ, ড. আব্দুর রাজ্জাক, লে. কর্নেল (অব:) ফারুক খান, জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ ও আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম।

অন্য দিকে ক্লিন ইমেজের মধ্যে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তানজিম আহমেদ সোহেল তাজ আলোচনায় রয়েছেন। অবশ্য সোহেল তাজ আর রাজনীতিতে ফিরতে চান না বলে গতকাল সাংবাদিকদের জানিয়েছেন। তিনি বলেন, আমার কথা স্পষ্ট। আমি বারবার বলেছি, আমার রাজনীতিতে আসার কোনো সম্ভাবনা নেই। এই পচা, নোংরা ও নষ্ট রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে আর ফিরতে চাই না।

বিশিষ্ট রাজনৈতিক বিশ্লেষক গোলাম মাওলা রনি নয়া দিগন্তকে বলেন, আওয়ামী লীগ তো এখন মৃত। যে গণরোষ তৈরি হয়েছে তাতে আওয়ামী লীগ আগামী ২০ বছরেও এই ধকল কাটিয়ে উঠতে পারবে বলে মনে হয় না। তিনি বলেন, শেখ হাসিনা ও ওবায়দুল কাদেরকে দিয়ে আর রাজনীতি হবে না। উনাদের জায়গায় ভারপ্রাপ্ত দিয়ে যদি কিছু করা যায়।