আপডেট নিউজ:

দি ডেইলী বার্তা পরিবারের পক্ষ থেকে নতুন বছরের শুভেচ্ছা।

‌পুলিশের গাড়ির লাইসেন্স নেই, নিরাপদ সড়ক কীভাবে হবে?

দারাজের পুরষ্কার, এমন অজানা লিংকে কেউ ভুলেও ক্লিক বা প্রেবেশ কিংবা শেয়ার করবেন।

ব্রাজিলকে হারিয়ে কোপা আমেরিকা শিরোপা জয় আর্জেন্টিনার

সর্বোচ্চ পেশাদারী উৎকর্ষতা অর্জনে মনোযোগ দিন : সেনা সদস্যদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী

বিএনপি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অন্ধ বিরোধিতা করছে: ওবায়দুল কাদের

চুয়াডাঙ্গা পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম খোকন বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন।

রিফাত হত্যা মামলা: মিন্নি, ফরাজি, রাব্বি, সিফাত, হৃদয় ও হাসান এর মৃত্যুদণ্ড। বাকি ৪ আসামি খালাস।

ধর্ষণ মামলায় ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর গ্রেপ্তার

প্রতিপক্ষের আঘাতে নয়; স্বামীর হাতে খুন হন নাছিমা

তালা (সাতক্ষীরা) সংবাদদাতাঃ

সাতক্ষীরার তালায় পাট চুরির অভিযোগে গৃহবধু নাছিমা খাতুনকে পিটিয়ে হত্যা শিরোনামে পাঠক ইতিমধ্যেই পত্র-পত্রিকা, টিভি চ্যানেল, অন-লাইন ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কল্যানে মর্মান্তিক এই হত্যাকান্ড সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। ঘটনাটি যতটা না মর্মান্তিক তার চেয়ে ঢের বেশি পৈশাচিক।

স্বামীর হাতে খুন
প্রতিপক্ষের আঘাতে নয়; স্বামীর হাতেই খুন হন নাছিমা

গত ২৫ আগষ্ট (মঙ্গলবার) সাতক্ষীরার তালায় নৃশংসভাবে খুন হন নাছিমা খাতুন (৪৫)। তিন সন্তানের জননী নাছিমা খাতুন খলিলনগর ইউনিয়নের মহান্দী গ্রামের নাজের আলী শেখের স্ত্রী। ঐদিন সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (তালা সার্কেল) মোঃ হুমায়ুন কবির ও তালা থানার ওসি মোঃ মেহেদী রাসেল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

এ সময় প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিনজনকে আটক করে পুলিশ। ঘটনার দিনই নিহতের স্বামী নাজের আলী শেখ বাদী হয়ে নয় জনকে আসামী করে তালা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে, মামলা নং- ০৯।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, নিহতের বাড়ির পাশে একটি ডোবায় পাট জাগ দেয়াকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষরা ১৮ আগষ্ট নাজের আলী ও তার স্ত্রী নাছিমা খাতুনের বিরুদ্ধে পাট চুরির মিথ্যা অভিযোগ দেয় এবং ঐদিনই মহান্দী বাজারে নাজের আলী শেখকে বেধড়ক মারপিট করে, ঘটনার ছ’দিন পর ২৪ আগষ্ট নাজের শেখের স্ত্রী নাছিমা খাতুন গভীর নলকূপের খাবার পানি সংগ্রহ করতে গেলে প্রতিপক্ষরা দলবদ্ধভাবে তাকে ব্যাপক মারপিট করে। এক পর্যায়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে তার মাথায় আঘাত করলে সে লুটিয়ে পড়ে। ঘটনার পরদিন সকালে নিজ বাড়িতে মারা যান নাছিমা।

এদিকে স্থানীয় আইয়্যুব মীর, জাহাঙ্গীর, ইদ্রিস, ভ্যান চালক ইকবাল গাজী সহ অন্যান্য এলাাকাবাসী জানায়, নিহত নাছিমার স্বামী নাজের শেখ নিজেই হত্যাকান্ডটি ঘটিয়েছেন এবং প্রতিহিংসা বশত প্রতিপক্ষদের বিপদে ফেলতেই নিজে বাদী হয়ে থানায় হত্যা মামলাটি করেছেন।

স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, মারপিটের ঘটনার সময় তারা কেউই নাছিমার মাথায় আঘাতের চিহ্ন বা গভীর ক্ষত এবং রক্তক্ষরণ হতে দেখেননি। স্থানীয়রা জানান, নিহতের ছোট ছেলে এনামুল ভ্যান চালক ইকবালের সহযোগীতায় তাকে স্থানীয় পল্লী চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যায়। এসময় তাকে কেউ রক্তাক্ত অবস্থায় দেখেননি।

এ সংক্রান্তে নিহতের ছোট ছেলে এনামুল জানান, ২৪ আগস্ট (সোমবার) মারপিটের পর সামান্য ফোলা জখম নিয়ে পল্লী চিকিৎসকের কাছে মাকে নিয়ে যায় এনামুল, এসময় তার মায়ের মাথায় কোন কাটা কিংবা ক্ষত ছিল না। ডাক্তার তার মাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বাড়িতে নিয়ে যেতে বলে। পরদিন সকালে (মঙ্গলবার) এনামুল তার মায়ের জন্য খাবার স্যালাইন সংগ্রহ করতে বাজারে গেলে বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে তার বাবা নাজের শেখ নিজেই দা’য়ের আঘাতে খুন করে নাছিমাকে। স্যালাইন নিয়ে ফিরে এসে সে তার মাকে একটি কম্বল দিয়ে ঢাকা অবস্থায় দেখতে পায়। তার মায়ের প্রাণহীন মাথায় বড় ক্ষত আর তাজা রক্ত দেখে সে জ্ঞানশূণ্য হয়ে পড়ে। এসময় তার বাবা নাজের শেখ সত্য বললে তাকে প্রাণে মেরে ফেলবে বলে হুমকি দেয়। সে আরও জানায়, তার বাবা প্রতিপক্ষদের বিপদে ফেলতে এবং তাদের কাছ থেকে আর্থিক সুবিধা লাভের আশায় নৃশংসভাবে তার মাকে হত্যা করে এবং প্রতিপক্ষদের আসামী করে থানায় মামলা করে। বাবার ভয়ে সে পুলিশ ও সাংবাদিকদের কাছে মিথ্যা স্বাক্ষ্য দেয়। পরে নিরাপদ আশ্রয়ে গিয়ে সে সত্য প্রকাশ করে ও তার মায়ের হত্যার ন্যায় বিচার দাবি করে।

নিহতের ভাই আল-আমিন শেখ জানান, তার ভগ্নিপতি ইতিপূর্বে অসংখ্যবার তার বোনকে মারপিট করেছে এবং গুরুতর আহত করেছে। প্রথম থেকেই নাছিমার হত্যাকান্ড নিয়ে ভগ্নিপতির উপর সন্দেহ ছিল তার। ঘটনাটি সম্পর্কে সবিশেষ জানার পর এখন তিনি ও তার পরিবার নাজের শেখের বিরুদ্ধে অপর একটি হত্যা মামলা দায়ের করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

এবিষয়ে তালা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ মেহেদী রাসেল বলেন, নাজের শেখ কর্তৃক দায়েরকৃত মামলার তদন্ত অনেকটা এগিয়েছে। মামলার তদন্তের স্বার্থে গোপনীয়তা রক্ষার জন্য এখনই আর কিছু প্রকাশ করা সম্ভব নয়।