ওসি মোজাহারুল ইসলাম উদ্ধার করলেন সেই শিকলবন্দী মেয়েকে
আমিরুল ইসলাম, নাটোর জেলা প্রতিনিধিঃ
নাটোর অবশেষে শিকলবন্দী সাদিয়া ইসলাম শিমুকে উদ্ধার করেছেন নাটোরের গুরুদাসপুর থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) মোঃ মোজাহারুল ইসলাম।
শনিবার সন্ধায় শিকলবন্দী মেয়েকে নিয়ে গণমাধ্যমে একটি সংবাদ প্রকাশ হয়। সংবাদটি নজরে আসে এই কর্মকর্তার।
শনিবার রাত আনুমানিক সাড়ে ১১ টায় ঘটনাস্থলে পৌছে ওই মেয়েকে শিকলবন্দী থেকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসেন পুলিশ।
উল্লেখ্য, সাদিয়া ইসলাম শিমু। দশম শ্রেণীর ছাত্রী। পরিবারের অজান্তে একটি ছেলের সাথে পালিয়ে বিয়ে করার অপরাধে প্রায় এক মাস যাবৎ তাকে শারিরীক নির্যাতন চালিয়ে শিকলবন্দী করে রাখা হয়েছিলো।
ঘটনাটি ঘটেছিলো নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার চাপিলা ইউনিয়নের নওপাড়া গ্রামে। শিমু ওই এলাকার নওপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী। নওপাড়া গ্রামের মোঃ সাইফুল ইসলামের বড় মেয়ে তিনি।
ভুক্তভুগি মেয়ে সাদিয়া ইসলাম শিমু জানান, ৫ বছর যাবৎ প্রতিবেশি বকুল মন্ডলের ছেলে মাসুদ রানার সাথে প্রেমের সম্পর্ক চলে আসছিল।
তিন মাস আগে বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়ে তারা দুইজন বিয়ে করে।
তারপর তার বাবা অপহরণ মামলা করে। পরে পুলিশ গিয়ে ঢাকা থেকে তাদের আটক করে নিয়ে আসে। তার স্বামী ও শশুড়কে আটক করে নাটোর জেল হাজতে প্রেরণ করে এবং তাকে তার বাবার কাছে প্রেরণ করা হয়।
পরে আদালতের নির্দেশে তাকে তার বাবার হেফাজতে শর্ত সাপেক্ষে হস্তান্তর করা হয়। কোন রকম চাপ সৃষ্টি কিংবা নির্যাতন যেন না করা হয় তার জন্য আদালতের নির্দেশ দেওয়া হয়।
কিন্তু তাকে তার বাবা বাড়িতে নিয়ে এসে শিকলেবন্দী করে এবং শারিরিক নির্যাতন চালায়। পরে পুলিশ গিয়ে তাকে তার বাসা থেকে উদ্ধার করে।
গুরুদাসপুর থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) মোঃ মোজাহারুল ইসলাম জানান, গণমাধ্যমে সংবাদ দেখার পরে রাতেই ঘটনাস্থলে পৌছাই।
বাড়িতে প্রবেশ করার পর বাড়ির একটি কক্ষে ওই মেয়েকে তার হাত ও পায়ে শিকলবন্দী অবস্থায় পাওয়া যায়।
সেখানেই তার হাত ও পায়ের শিকল খুলে দেওয়া হয় এবং থানায় নিয়ে আসা হয়েছে ও মেয়ের বাবা সাইফুল ইসলামকে আটক করা হয়।
রোববার সকালে মেয়ের করা মামলায় তাকে নাটোর জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে এবং ওই মেয়েকেও আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
আদালত সিদ্ধান্ত নিবে ওই মেয়ে কোথায় থাকবে।