আপডেট নিউজ:

দি ডেইলী বার্তা পরিবারের পক্ষ থেকে নতুন বছরের শুভেচ্ছা।

‌পুলিশের গাড়ির লাইসেন্স নেই, নিরাপদ সড়ক কীভাবে হবে?

দারাজের পুরষ্কার, এমন অজানা লিংকে কেউ ভুলেও ক্লিক বা প্রেবেশ কিংবা শেয়ার করবেন।

ব্রাজিলকে হারিয়ে কোপা আমেরিকা শিরোপা জয় আর্জেন্টিনার

সর্বোচ্চ পেশাদারী উৎকর্ষতা অর্জনে মনোযোগ দিন : সেনা সদস্যদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী

বিএনপি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অন্ধ বিরোধিতা করছে: ওবায়দুল কাদের

চুয়াডাঙ্গা পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম খোকন বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন।

রিফাত হত্যা মামলা: মিন্নি, ফরাজি, রাব্বি, সিফাত, হৃদয় ও হাসান এর মৃত্যুদণ্ড। বাকি ৪ আসামি খালাস।

ধর্ষণ মামলায় ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর গ্রেপ্তার

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া কি শুরু

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে দেশের সর্বোচ্চ আদালতের দেয়া রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ (পুনর্বিবেচনার) আবেদন করা হয়েছে। সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনীর মাধ্যমে সেই ব্যবস্থা প্রবর্তন করা হয়েছিল।

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া কি শুরু
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া কি শুরু

এর আগে পঞ্চদশ সংশোধনী নিয়ে করা এক রিটের পরিপ্রেক্ষিতে তা সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক ঘোষণা করা হবে না কেন তা জানতে চেয়ে রুলও দিয়েছে হাইকোর্ট।

২০১১ সালে জাতীয় সংসদে পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিলসহ সংবিধানে বেশ কিছু পরিবর্তন আনা হয়।

এই দু’টি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফিরে আসার একটি ভিত তৈরি হলো বলে মনে করছেন রিটকারীদের একজন বদিউল আলম মজুমদার।

রিভিউ আবেদনে যা চাওয়া হয়েছে
আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন বিরোধী দলগুলোর আন্দোলনের চাপে ১৯৯৬ সালে সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত করে ত্রয়োদশ সংশোধনী জাতীয় সংসদে পাস করে বিএনপি।
এর দু’বছর পর আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে ওই সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করা হয়।

পরে ২০০৪ সালে বিএনপি সরকারের সময়ে সেই রিট খারিজ হলে এ ব্যবস্থা বহালই থাকে। পরের বছর এর বিরুদ্ধে আপিল করা হয়। এরপরে ২০০৭ সালে আবার তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় আসে।

পরে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ২০১০ সালে আপিল শুনানি শুরু হয়।

তৎকালীন প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হকসহ সাত বিচারপতির আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ ২০১১ সালের ১০ মে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল ঘোষণা করে রায় দেয়। পরের বছর সেপ্টেম্বরে পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়।

আপিল বিভাগের ওই রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে সম্প্রতি আবেদন করা হয়েছে।

রিভিউ আবেদন করার কারণ সম্পর্কে আবেদনকারীদের আইনজীবী শরীফ ভুঁইয়া বলেন, ‘জাজমেন্টের আমরা রিভিউ চেয়েছি, কারণ এটার অনেকগুলো আইনগত ত্রুটি আছে।’

একইসাথে এ রায়ের মধ্যে পরস্পরবিরোধী ব্যাপার আছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘যেমন সংক্ষিপ্ত রায়ে বলা হয়েছিল দু’টি নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে করতে হবে। পরে বিস্তারিত আদেশে এটা আর নেই। কাজেই এটা একটা পরস্পরবিরোধী।’

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা গণতন্ত্র, ভোটাধিকারকে সুসংহত করে, এগুলো সংবিধানের মূল কাঠামো উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার এগুলো নিশ্চিত করে। এর জন্য এ ব্যবস্থা সংবিধানের মূল কাঠামোর অংশ। কাজেই আপিল বিভাগ একটা রায় দিয়ে এটা বাতিল করতে পারে না।’

আপিল বিভাগ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করতে গিয়ে কিছু ক্ষমতা ব্যবহার করেছে যেগুলো বিচার বিভাগ বা নির্বাহী বিভাগের করার কথা। এটা ক্ষমতা পৃথকীকরণ নীতির পরিপন্থী ছিল বলে মনে করেন তিনি।

এ আবেদনের মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফেরানোর প্রক্রিয়া শুরু হলো কিনা এমন প্রশ্নে শরীফ ভুঁইয়া বলেন, ‘আমাদের দেশের সাংবিধানিক সংস্কারের একটা অংশ হিসেবে এটাকে দেখতে চাই, এটা যেমন একটা দিক। তেমনি রায়টা রিভিউ হয়ে, বিচারপতি খায়রুল হকের নেতৃত্বে রায়টা যদি বাতিল হয় তাহলে অবশ্যই তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা সংবিধানে ফিরবে। সেটাও অবশ্য একটা দিক।’

যারা এই রিভিউ আবেদনটি করেছেন তারা মূল আপিল মামলায় পক্ষভুক্ত ছিলেন না।

এক্ষেত্রে আবেদন করার আইনগত সুযোগ রয়েছে কিনা এমন প্রশ্নে শরীফ ভুঁইয়া বলেন, ‘আইনগতভাবে এটা করা যায়। যে মামলায় রিভিউ করছি তাতে যদি আগে পক্ষ না থাকেন তবে আদালতের অনুমতি নিয়ে রিভিউ করতে হয়। আমরা গত ২৫ আগস্ট আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালতের কাছ থেকে অনুমতি নিয়েছি। গতকাল রিভিউ পিটিশন ফাইল করা হয়েছে।’

সুপ্রিমকোর্টের অবকাশকালীন ছুটির পর অক্টোবরে তারা শুনানির জন্য উদ্যোগ নেবেন বলে জানান শরীফ ভুঁইয়া।

কেন রিভিউ চাওয়া হয়েছে?
সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার, স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ তোফায়েল আহমেদ, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা এম হাফিজ উদ্দিন খানসহ পাঁচজন এ রিভিউ আবেদনটি করেন।

সুজনের সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘পঞ্চদশ সংশোধনী ছিল অসাংবিধানিক। এর মাধ্যমে ভোটাধিকার হরণ ও গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে অকার্যকর করা হয়েছে। আমরা আশা করছি এ সংশোধনী বাতিল হয়ে যাবে। কিন্তু বাতিল হলেও একটা অস্পষ্টতা থেকে যায়।’

তিনি বলেন, ‘যেহেতু অস্পষ্টতা থেকে যায় তাই আমরা ত্রয়োদশ সংশোধনীও বাতিলের মামলার রায় রিভিউয়ের আবেদন করেছি।’

পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে অনেক অন্যায় করা হয়েছে, সেগুলোর বিহিত হওয়া দরকার উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, ‘এর মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফিরে আসবে, এটা একটা ভিত তৈরি করবে। যার ভিত্তিতে বর্তমান সরকার বিভিন্ন সংস্কার করতে পারবে নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে।’

সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী নিয়ে রুল
এর আগে গত ১৯ আগস্ট সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী কেন সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক ঘোষণা করা হবে না জানতে চেয়ে রুল দেয় হাইকোর্ট।

পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিলের নির্দেশনা চেয়ে এ রিটটি করেন সুশাসনের জন্য নাগরিকের সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচজন। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের রায় রিভিউ চেয়ে তারাই আবেদন করেন।

একইসাথে দু’টি প্রক্রিয়ার ব্যাখ্যা হিসেবে বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল সংক্রান্ত আগের রায় যদি বাতিল হয় তবে পঞ্চদশ সংশোধনী থেকে যাচ্ছে। এ সংশোধনীও বাতিল হওয়া দরকার। দু’টিই বাতিল হতে হবে। যেহেতু অসাংবিধানিকভাবে সংসদে এটা পাস করা হয়েছে সেটাও প্রমাণ করা দরকার।’

ওই সময় রিটকারীর আইনজীবী শরীফ ভুঁইয়া বলেন, ‘সংবিধানের ১৪২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী একসাথে অনেকগুলো অনুচ্ছেদে পরিবর্তন বা সংশোধনী আনতে হলে গণভোট করতে হবে। এ সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানের অনেকগুলো অনুচ্ছেদের পরিবর্তন আনা হয়। কিন্তু কোনো গণভোট করা হয়নি। গণভোট না করে সংশোধনী পাস করা সংবিধান পরিপন্থী।’

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বিলোপসহ কয়েকটি বিষয়ে ২০১১ সালে পঞ্চদশ সংশোধনী আনা হয়। ওই বছরের ৩ জুলাই এ সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশ করা হয়।