আপডেট নিউজ:

দি ডেইলী বার্তা পরিবারের পক্ষ থেকে নতুন বছরের শুভেচ্ছা।

‌পুলিশের গাড়ির লাইসেন্স নেই, নিরাপদ সড়ক কীভাবে হবে?

দারাজের পুরষ্কার, এমন অজানা লিংকে কেউ ভুলেও ক্লিক বা প্রেবেশ কিংবা শেয়ার করবেন।

ব্রাজিলকে হারিয়ে কোপা আমেরিকা শিরোপা জয় আর্জেন্টিনার

সর্বোচ্চ পেশাদারী উৎকর্ষতা অর্জনে মনোযোগ দিন : সেনা সদস্যদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী

বিএনপি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অন্ধ বিরোধিতা করছে: ওবায়দুল কাদের

চুয়াডাঙ্গা পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম খোকন বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন।

রিফাত হত্যা মামলা: মিন্নি, ফরাজি, রাব্বি, সিফাত, হৃদয় ও হাসান এর মৃত্যুদণ্ড। বাকি ৪ আসামি খালাস।

ধর্ষণ মামলায় ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর গ্রেপ্তার

নিয়ামতপুরে হিন্দু যুবতীর মুসলিম তরুণকে বিয়ে অতঃপর অবরুদ্ধ

নিয়ামতপুর (নওগাঁ) প্রতিনিধি।

নওগাঁর নিয়ামতপুরে এক নারী হিন্দু ধর্ম ত্যাগ করে মুসলমান হয়ে মুসলিম ছেলেকে বিয়ে করায় তাকে বাড়ীতে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে।
নিয়ামতপুরে হিন্দু যুবতীর মুসলিম তরুণকে বিয়ে অতঃপর অবরুদ্ধ
নিয়ামতপুরে হিন্দু যুবতীর মুসলিম তরুণকে বিয়ে অতঃপর অবরুদ্ধ

ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার বাহাদুরপুর ইউনিয়নের গুজিশহর গ্রামে।
ঐ নারী গুজিশহর গ্রামের উপেন্দ্র নাথের মেয়ে। মেয়ের নাম কুমারী সম্পা (বর্তমান নাম নুসরাত খাতুন)।
আর তিনি যাকে বিয়ে করেছেন তার নাম- মোঃ আল-আমীন। সে একই গ্রামের আব্দুল জলিলের ছেলে।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, আল-আমীন এবং সম্পা (বর্তমান নাম নুসরাত খাতুন) গুজিশহর প্রাথমিক বিদ্যালয়, উচ্চ বিদ্যালয়ে এবং বালাতৈড় সিদ্দিক হোসেন ডিগ্রী কলেজে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত একই সাথে লিখাপড়া ও যাতায়াত করত।

সেই কারণে তাদের মধ্যে মন দেওয়া নেওয়া হয়ে যায়।
পরবর্তীতে আল-আমীন মান্দা উত্তরা ডিগ্রী কলেজে ব্যবস্থাপনা বিষয়ে অনার্স এ ভর্তি হয়ে লিখাপাড়া চালিয়ে যায় এবং সম্পা (বর্তমান নাম নুসরাত খাতুন) রাজশাহী মহিলা কলেজে অনার্সে ভর্তি হয়।

লিখাপড়ার পাশাপাশি আল আমীন একটি বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে রাজশাহীতে কর্মরত ছিলেন। তাদের উভয়ের সম্পর্ক আরো গভীর হলে তারা পরস্পর বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।

তারই প্রেক্ষিতে মেয়ে কুমারী সম্পা (বর্তমান নাম নুসরাত খাতুন) গত ৫ ফেব্রয়ারী ২০২০ রাজশাহী জজ কোর্টে নোটারী পাবলিকের মাধ্যমে ধর্ম ত্যাগ করে নুসরাত খাতুন নাম গ্রহন করে মুসলিম ধর্ম গ্রহন করে।

একই দিনে রাজশাহী জজ কোর্টে নোটারী পাবলিকের মাধ্যমে আল আমিন ও নুসরাত বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।
রাজশাহীর রাজপাড়ার মহিষবাথান নিকাহ রেজিষ্টার অফিসে গিয়ে গত ১৪ মার্চ ২০২০ তারিখে বিবাহ রেজিষ্ট্রি করেন।

তারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে সুখে সংসারের পাশাপাশি লিখাপড়া চালিয়ে যাচ্ছিল। এমতবস্থায় নুসরাতের দাদু পরলোক গমন করায় তাকে তার বাব মা বাড়ীতে নিয়ে আসার চেষ্টা করলে সে আসতে অনিহা প্রকাশ করে।
নুসরাত বাবার বাড়ী না আসায় বাবা ও চাচারা কৌশলে বাড়ীতে নিয়ে এসে অবরুদ্ধ করে রাখে।

এদিকে আল-আমিন স্ত্রী নুসরাত খাতুনকে নিতে গেলে নুসরাতের বাবা চাচারা খারাপ আচরণ করে এবং নুসরাতকে মারধর করে।

এ বিষয়ে আল-আমীন এ প্রতিবেদককে বলেন, আমার স্ত্রী নুসরাত খাতুনকে ফিরে পাওয়ার জন্য আমি স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আবুল কালাম আজাদের কাছে যায়।

গিয়ে কোন সুরাহা না পেয়ে নিয়ামতপুর থানায় আসি।
সেখানেও কোন সাহায্য সহযোগিতা না পেয়ে বিচারের আশায় এবং স্ত্রীকে ফিরে পাওয়ার জন্য আইনের দরজায় দরজায় ঘুরছি।

বিষয়টি সরেজমিনে তদন্তে গেলে নুসরাতের চাচা রাজাপুর দরগাপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক প্রভাষ চন্দ্র প্রামানিক প্রথমে নুসরাতের সাথে দেখা করতে অপারগতা জানায়।
পরে দেখা ও কথা বলতে রাজি হলে নুসরাত এ প্রতিবেদকের সাথে কথা হয়।

নুসরাত খাতুন এ প্রতিবেদককে বলেন, আমি আজই আমার স্বামীর বাড়ীতে চলে যাবো। আপনারা আমাকে জোর করে আটকে রাখতে পারবেন না।
কথাগুলো কান্না বিজড়িত কন্ঠে তার মা ও চাচার সামনেই বলতে শুরু করে।

সে আরো জানায়, আমি নিজ ইচ্ছায় স্বজ্ঞানে ধর্ম ত্যাগ করে মুসলিম ধর্ম গ্রহন করে আল-আমিনকে বিয়ে করেছি। সেই এখন আমার আপনজন।
এরা আমাকে ধর্মের দোহাই দিয়ে আটকে রেখেছে এবং আলা আমিনের উপরে বিভিন্ন ভাবে ভয়ভীতি দেখিয়ে আমার কাছ থেকে দূরে সরে দিতে চাচ্ছে।

আমার আকুল আবেদন আমি স্বামীর কাছে ফিরে যেতে চাই। আমি ধর্ম ত্যাগ করেছি বলে কি আমার উপর নির্যাতন চলবে? আমাকে জোর করে বাড়ী আটকে রাখবে? দেশে কি আইন নাই।

আমি এখন সাবালক।আমার নিজের সিদ্ধান্ত নেওয়া অধিকার রয়েছে। জীবন সঙ্গী বেচে নেওয়াও অধিকার রয়েছে। আমি দেশ ও সমাজের কাছে আমার স্বামীকে ফিরে পেতে চাই। আমি বন্দী জীবন থেকে মুক্তি চাই।

এ বিষয়ে নিয়ামতপুর থানার অফিসার ইন চার্জ হুমায়ন কবির বলেন, ছেলেটি আমার কাছে পরামর্শের জন্য এসেছিল।

আমি তাকে আদালতে স্ত্রী উদ্ধারের জন্য ১০০ ধারায় মামলা দায়ের করতে বলেছি। এবং বিয়ের যাবতীয় কাগজ সঙ্গে নিয়ে আসতে বলেছি। আদালতের মাধ্যমে আমরা তাকে সহযোগিতা করতে পারবো।