আপডেট নিউজ:

দি ডেইলী বার্তা পরিবারের পক্ষ থেকে নতুন বছরের শুভেচ্ছা।

‌পুলিশের গাড়ির লাইসেন্স নেই, নিরাপদ সড়ক কীভাবে হবে?

দারাজের পুরষ্কার, এমন অজানা লিংকে কেউ ভুলেও ক্লিক বা প্রেবেশ কিংবা শেয়ার করবেন।

ব্রাজিলকে হারিয়ে কোপা আমেরিকা শিরোপা জয় আর্জেন্টিনার

সর্বোচ্চ পেশাদারী উৎকর্ষতা অর্জনে মনোযোগ দিন : সেনা সদস্যদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী

বিএনপি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অন্ধ বিরোধিতা করছে: ওবায়দুল কাদের

চুয়াডাঙ্গা পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম খোকন বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন।

রিফাত হত্যা মামলা: মিন্নি, ফরাজি, রাব্বি, সিফাত, হৃদয় ও হাসান এর মৃত্যুদণ্ড। বাকি ৪ আসামি খালাস।

ধর্ষণ মামলায় ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর গ্রেপ্তার

মিয়ানমার প্রধান সু চির বক্তব্যে মিয়ানমার প্রধান সু চির বক্তব্যে

জিয়াবুল হক, টেকনাফ প্রতিনিধি :

রোহিঙ্গা গণহত্যার অভিযোগে গাম্বিয়ার করা মামলার রায়ের শুনানি দ্বিতীয় দিনে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে অংসান সু চির বক্তব্যকে নির্লজ্জ মিথ্যাচার বলে মন্তব্য করেছেন কক্সবাজারের টেকনাফের বসবাসরত ক্যাম্পে আশ্রিত রোহিঙ্গারা। 

বুধবার (১১ ডিসেম্বর) বিকাল ৩টার দিকে বিচারের খবর জানতে কেউ চায়ের দোকানের টেলিভিশনে আবার কেউ মোবাইল ফোনে খবর দেখতে রোহিঙ্গারা ভিড় জমান। এ সময় তারা মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চির গণহত্যার সমর্থনে দেওয়া বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও সমালোচনা করতে দেখা যায়।

আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে বক্তব্যে অং সান সুচি রাখাইনে সহিংসতার কথা স্বীকার করলেও একে কোনোভাবেই গণহত্যা বলা যায় না বলে মন্তব্য করেন।

ক্যাম্প সমুহ ঘুরে দেখা যায়, ১১ ডিসেম্বর বুধবার বিকালে টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের লেদা বসবাসরত রোহিঙ্গা ক্যাম্পের একটি চায়ের দোকানে দেখা যায় টেলিভিশনে খবর দেখতে রোহিঙ্গা শত শত পুরুষদের ভিড় করতে দেখা যায়। তাদের মধ্যে ইংরেজি ভাষা জানা রোহিঙ্গা যুবকও ছিলেন। তারা আগ্রহ নিয়ে মিয়ানমার সরকারের প্রধান সু চির বক্তব্য শুনছিলেন। এ সময় এক বৃদ্ধ নুরুল ইসলাম 

বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের গণহত্যার বিষয়টি অস্বীকার করলেন আমাদের জন্মভূমির নেত্রী অংসান সু চি। একজন মানুষ কত নির্লজ্জ হলে এমন কথা বলতে পারেন তা ভাবতে কষ্ট হয়। তবে গাম্বিয়া ও বাংলাদেশ সরকারকে ধন্যবাদ জানাই, মিয়ানমার সরকারকে কাঠগড়ায় নিয়ে যাওয়ার জন্য।’

তিনি আরও বলেন, টেলিভিশনে দেখে আমার মনে হয় তিনি কিছুই জানেন না। যতদিন বেঁচে থাকবেন সু চি ততদিন নিজের স্বার্থে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর পক্ষ নিয়ে কথা বলবেন। যার জন্য নিজ জন্মভূমিতে সেনাবাহিনীর সদস্যদের লড়াই করেছিলাম, তার বক্তব্যে শুনে জীবনে সব চেয়ে দু:খ পেয়েছি, আমাদের এই দু:খ বুঝার কে আছে। আমরা আশা করছি আদালতে রোহিঙ্গারা সুষ্ঠু বিচার পাবে।’

জাদিমুড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পের পাশে দোকানে ছোট ভাইকে সঙ্গে নিয়ে টেলিভিশন দেখতেছিলেন কবির আহম্মদ। তিনি বলেন, ‘গাম্বিয়ার হেগে গণহত্যা মামলার শুনানি হওয়ার কথা শুনে নতুন করে আশার আলো দেখতেছিল নির্যাতিত রোহিঙ্গারা। সঠিক বিচার হলে শাস্তি পাবে গণহত্যার সঙ্গে জড়িত মিয়ানমার সেনাবাহিনী। এর ফলে নাগরিকত্বসহ মৌলিক অধিকার নিশ্চিত হলে রোহিঙ্গারা নিজ দেশে ফিরে যেতে রাজি হবে। বুধবার সকাল থেকে ক্যাম্পে ইন্টারনেট সেবা পাওয়া যাচ্ছে। ফলে গাম্বিয়ার খবর রোহিঙ্গারা দেখতে সুবিধা হচ্ছে।’

এছাড়া টেকনাফের জাদিমুরা, নয়াপাড়া, শালবন, লেদা উখিয়ার লম্বাশিয়া, জামতলী, মধুরছড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দারাও গণমাধ্যমের খবর দেখায় ব্যস্ত ছিলেন।

রোহিঙ্গা নেতা আবদুল মোতালেব ও মোহাম্মদ সালাম বলেন, রোহিঙ্গা নারী-পুরুষদের উপর যে গণহত্যা চালানো হয়েছে, তার শাস্তি তারা পাবে মিয়ানমার। ন্যায়বিচার পাওয়ার জন্য গত কয়েকদিন রোহিঙ্গারা ক্যাম্পে রোজা, দোয়া মাহফিলসহ বিশেষ প্রার্থনা করছে। তাছাড়া মিয়ানমারের বর্বরতার সাক্ষ্য দিতে ভিকটিম হিসেবে তিনজন রোহিঙ্গা হেগে গেছেন। তাদের মধ্যে দুজন নারী। রোহিঙ্গা প্রতিনিধিরা সেখানে নির্মম ঘটনাগুলো সেখানে তুলে ধরবে। আমরা আশা করি, আইসিজিতে সঠিক বিচার হবে। বিচার পেলে আমরা স্বেচ্ছায় মিয়ানমার চলে যাবো।’

সংবাদ মাধ্যমের বরাত দিয়ে আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটসের (এআরএসপিএইচ) ভাইস চেয়ারম্যান আবদুর রহিম বলেন, ‘আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে অং সান সু চির দেওয়া বক্তব্য মিথ্যাচার এবং সাজানো। কীভাবে রোহিঙ্গাদের উপর সংগঠিত গণহত্যাকে অস্বীকার করলেন তিনি। বিষয়টি আমাদের মর্মাহত করেছে। এতে বুঝেছি আসলে তিনি নির্লজ্জ। আমরা আশা করছি, মিয়ানমার সরকার ও সেনাবাহিনীর কাঠোর শাস্তি হবে।’

এ প্রসঙ্গে কথা হয় বাংলাদেশ শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার কার্যালয়ের কর্মকর্তা ও টেকনাফের শালবন, জাদিমুরা রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ইনচার্জ (উপ-সচিব) মোহাম্মদ খালিদ হোসেনের সঙ্গে। তিনি জানান, ‘আন্তর্জাতিক আদালতে দেওয়া অং সান সু চি’র বক্তব্য নিয়ে ক্যাম্পে রোহিঙ্গাদের কোনও ধরনের কর্মসূচি ছিল না।’ পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে বলে জানান তিনি।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন বলেন, ‘আন্তর্জাতিক আদালতে বিচারের শুনানি নিয়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যাতে কেউ অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করতে না পারে সেজন্য আমরা সর্তক অবস্থানে ছিলাম।