আপডেট নিউজ:

দি ডেইলী বার্তা পরিবারের পক্ষ থেকে নতুন বছরের শুভেচ্ছা।

‌পুলিশের গাড়ির লাইসেন্স নেই, নিরাপদ সড়ক কীভাবে হবে?

দারাজের পুরষ্কার, এমন অজানা লিংকে কেউ ভুলেও ক্লিক বা প্রেবেশ কিংবা শেয়ার করবেন।

ব্রাজিলকে হারিয়ে কোপা আমেরিকা শিরোপা জয় আর্জেন্টিনার

সর্বোচ্চ পেশাদারী উৎকর্ষতা অর্জনে মনোযোগ দিন : সেনা সদস্যদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী

বিএনপি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অন্ধ বিরোধিতা করছে: ওবায়দুল কাদের

চুয়াডাঙ্গা পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম খোকন বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন।

রিফাত হত্যা মামলা: মিন্নি, ফরাজি, রাব্বি, সিফাত, হৃদয় ও হাসান এর মৃত্যুদণ্ড। বাকি ৪ আসামি খালাস।

ধর্ষণ মামলায় ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর গ্রেপ্তার

শিরোনাম:

লিভার ক্যান্সার থেকে বাঁচুন

দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া ও আফ্রিকার সাব-সাহারা অঞ্চলে লিভার ক্যান্সার এর প্রকোপ সবচেয়ে বেশি। আমাদের শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ লিভার বা যকৃত। প্রতি বছর বিশ্বে প্রায় আট লক্ষ মানুষের শরীরে রোগটি সনাক্ত হয়। লিভার মানুষেরর গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ। পেটের উপরিভাগের ডান পাশে এর অবস্থান। লিভারের দুটো লোব রয়েছে, ডান ও বাম লোব। যকৃতের কাজ হচ্ছে শরীরের দূষিত পদার্থগুলো বর্জ্য আকারে শরীর থেকে বের করে দেওয়া। আরেকটি কাজ হচ্ছে বাইল বা পিত্ত তৈরি করা যা আমাদের চর্বিজাতীয় খাদ্যের বিপাকের জন্য প্রয়োজন। খাদ্য জমা রাখাও যকৃতের আরেকটি কাজ।

লিভার ক্যান্সার থেকে বাঁচুন

লিভার ক্যান্সার কী

লিভার কোষ যা হেপাটোসাইটের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি এবং অসুস্থ কোষ স্বাভাবিক কোষের জায়গা দখল করে লিভার ক্যান্সার সৃষ্টি করে। এ কোষ সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয়ে বুকের পাঁজরের ডান দিকে অনুভব করা যায়। দুই ভাবে লিভার ক্যান্সার সৃষ্টি হতে পারে। প্রাইমারি এবং সেকেন্ডারি লিভার ক্যান্সার। প্রাইমারিকে মেডিকেল পরিভাষায় হেপাটোসেলুলার কার্সিনোমা বলে। সেকেন্ডারি হলো শরীরের অন্য অংশ থেকে উদ্ভূত (যেমন- কোলন, ফুসফুস) হয়ে লিভারে ছড়িয়ে পড়া। একে মেটাসটেটিক লিভার ক্যান্সার বলে।

লিভার ক্যান্সারের ঝুঁকিপূর্ণ উপাদান

এ ক্যান্সারের অন্যতম কারণ হচ্ছে হেপাটাইটিস বি ও সি ভাইরাসের সংক্রমণ। আমাদের দেশে এ দুটি ভাইরাস দীর্ঘদিনের লিভার রোগের কারণ। এছাড়া অ্যালকোহল পান, লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত রোগী ও স্থূলকায় ব্যক্তি লিভার ক্যান্সারের জন্য বাড়তি ঝুঁকি বয়ে আনে। লিভার সিরোসিস আবার হেপাটাইটিস ‘বি’ ও ‘সি’র জন্যই হয়ে থাকে। আশার বিষয়, আমাদের দেশে প্রাইমারি হেলথ কেয়ার সার্ভিসে হেপাটাইটিস বি-এর জন্য ভ্যাকসিন সহজলভ্য করা হয়েছে EPI প্রোগ্রামে। ‘বি’ ও ‘সি’ ভাইরাসের প্রতিরোধের উপায় হচ্ছে- ইনজেকশন আকারে মাদক গ্রহণ বন্ধ করা, নিরাপদ যৌন মিলন এবং নিরাপদ রক্ত বা রক্তের উপাদান পরিসঞ্চালন।

উপসর্গ

  • পেটের ডান পাশের উপরিভাগে চাকা অনুভব হওয়া
  • জন্ডিস (ত্বকের হলদে ভাব)
  • ওজন কমে যাওয়া, বমি ভাব
  • খুধামন্দা, ঝিমুনি

ডায়াগনেসিস

  • রক্ত পরীক্ষা : সিরাম বিলিরুবিন, এসজিপিটি, এসজিওটি, সিরাম অ্যালবুমিন, সিরাম এএফপি।

এর মধ্যে বিলিরুবিন দ্বারা জন্ডিসের মাত্রা বোঝা যায়। এএফপি (আলফা ফেটো প্রোটিন) উচ্চমাত্রায় হলে লিভার ক্যান্সার হয়েছে বলে ধারণা করা যায়।

  • আলট্রাসাউন্ড-সবচেয়ে সহজলভ্য আমাদের দেশে। এর দ্বারা লিভারের আকার, টিউমারের সংখ্যা নির্ণয় করা যায়।
  • এছাড়া সিটি স্ক্যান, এমআরআই ও এনজিওগ্রাম দ্বারা লিভার ক্যান্সার সনাক্তকরণ সহজ হয়।
  • সর্বোপরি বায়োপসি অর্থাৎ Image Guidence এ সূচ দ্বারা লিভারের কোষ এনে মাইক্রোস্কোপ দ্বারা পরীক্ষা করা হয়।

ক্যান্সারের বিস্তৃতি

অন্যান্য solid cancer-এর মতো লিভার ক্যান্সার-এর I থেকে IV চারটি stage রয়েছে। stage I ও II মানে হচ্ছে Early stage এবং III ও IV দ্বারা Advanced stage বোঝানো হয়।

চিকিৎসা

চিকিৎসার আগে কতগুলো অতি গুরুত্বপূর্ণ Factors সামনে আসবে। প্রথমত রোগীর বয়স, অন্যান্য আনুষঙ্গিক ব্যাধি। যেমন- উচ্চরক্তচাপ, ডায়াবেটিস, লিভার সিরোসিস, এক বা একাধিক টিউমার এবং AFP level.

সবকিছু বিবেচনা সাপেক্ষে Early stage লিভার ক্যান্সারে সার্জারি বিশেষ ভূমিকা পালন করতে পারে। Lobectomy liver প্রতিস্থাপন শল্যচিকিৎসার অংশ। সার্জারি অযোগ্য ক্যান্সারের ক্ষেত্রে ablation থেরাপি যেমন-cryoablation, রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি অ্যাবলেশন, ইথানল অ্যাবলেশন অন্যতম। এছাড়া কেমোথেরাপি দ্বারাও liver cancer-এর চিকিৎসা প্রদান করা হয়। অধূনা টার্গেটের থেরাপি নামে বেশ কিছু আধুনিক মলিকিউল যা মুখে সেবনের মাধ্যমে লিভার ক্যান্সার আংশিক নিয়ন্ত্রণ করা যায়।

সর্বোপরি এ ক্যান্সার অনেক ক্ষেত্রেই নিরাময়যোগ্য নয়। তাই প্রতিরোধের দিকে গুরুত্ব দিতে হবে যাতে ঝুঁকিপূর্ণ উপাদান নিয়ন্ত্রণ করে প্রকারন্তরে liver cancer-এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো যায়।

লেখক : বিভাগীয় প্রধান, রেডিওথেরাপি এবং অনকোলজি বিভাগ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ