ডাকবাংলাসহ ত্রিমহনীতে চারটি দোকান চুরি বাজার কমিটি ও পাহারাদার থাকতে চুরি হয় কিভাবে? অভিযোগ দোকান মালিকদের
সাইফুল ইসলাম ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ
মহামারি হয়তো একদিন ওষুধের মাধ্যমে যাবে, কিন্তু ডাকবাংলার দোকান চুরির ভাইরাস কোন ওষুধে দূর হবে?বোধ হয় আমাদের কিছুই বদলাবে না।
একটি ভাইরাসের কারণে সারা পৃথিবী যেখানে অচল পুরো পৃথিবীর মানবজাতি এক ভয়াবহ সংকটে নিপতিত এবং কবে এই মহাবিপর্যয় থেকে সারাবিশ্বের মানুষের মুক্তি মিলবে সেই আশায় দিন গুণছে সবাই।
এখন সারা পৃথিবীর মানুষ যখন মানসিকভাবে ঐক্যবদ্ধ, যেভাবেই হোক এই অদৃশ্য শত্রুকে পরাস্ত করতেই হবে। লোকমুখে আলোচনা হচ্ছে করোনাউত্তর পৃথিবীতে হয়তো অনেক কিছুই বদল যাবে, ক্ষমতার কেন্দ্র পাল্টে যাবে, বিশ্বনেতাদের চিন্তাও হয়তো পরিবর্তন আসবে— কিন্তু বাস্তবে মনে হচ্ছে না!
এই মহাদুঃসময়ে যখন মানুষ ‘ইয়া নফসি’তে ব্যস্ত,ঠিক সেই সময়ই ডাকবাংলা বাজারসহ উত্তর নারায়নপুর ত্রিমহনীতে রবিবার দিবাগত রাতে (১২ জুলাই ) দোকানের শাটার ভেঙে চারটি দোকানে চুরি।
ঘটনাটি ঘটেছে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ডাকবাংলা বাজার এলাকায় ও উত্তর নারায়নপুর ত্রিমহনীতে।
সরজমিনে গিয়ে জানা গেছে ,দোকানদারেরা প্রতিদিনের ন্যায় সকালে দোকান খোলার উদ্দেশ্য করে দোকানে এলে প্রথমেই তাদের নজরে পড়ে এই ঘটনা। ক্ষনিকের মধ্যে জানাজানি হতেই অন্যান্য ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষেরা তাদের দোকানে ছুটে আসেন।
ব্যবসায়ীদের অভিযোগ এ ধরনের চুরি প্রতিনিয়তই হয়ে থাকে। যে দোকানে চুরির ঘটনা ঘটে সেই দোকানের পাশেই রাত ভর পাহারাদার জেগে থাকেন।
পাহাদারদের আমরা প্রতি মাসে দোকান প্রতি মাসহারা দেয় ১০০-২০০ টাকা। তারপর ও কিভাবে এই মহামারী করোনা সংকটের মধ্যে চুরির ঘটনা ঘটে?
রবিবার দিবাগত রাতে কিছু দুষ্কৃতি ব্যক্তিরা বাজারের চারটি দোকানের শাটার ভেঙে চুরি করে।
দুটি মুদিখানা দোকান, একটি গার্মেন্ট ও একটি ঢেউ টিনের দোকানে চুরির ঘটনা ঘটে।
চারটি দোকানের মধ্যে উত্তর নারায়নপুর ত্রিমহনীর মোল্লা ষ্টোর থেকে নগদ দেড় লক্ষ টাকা,প্রায় ৪০ হাজার টাকার বিভিন্ন মোড়গের সিগারেটসহ ৩ হাজার টাকার কোমল পানি।
এদিকে ডাকবাংলা বাজারের নবি উদ্দিন ষ্টোর থেকে নগদ ৪ হাজার ও বিভিন্ন মোড়গের প্রায় ১০ হাজার টাকার সিগারেট।
রবিবার সকালে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ডাকবাংলা পুলিশ ক্যাম্পের এ এস আই মাখোন ছুটে যান ও চুরি হওয়া দোকানদারদের সান্তনা স্বরুপ কথা বলেন।
এবিষয়ে চুরি হওয়া দোকান মালিক সাজ্জাদ হোসেন প্রতিবেদককে জানান,ডাকবাংলা বাজার দোকান মালিক সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক সক্রিয় কিন্তু আমাদের পাহারাদার (নাইট গার্ড) যারা আছেন তারা একেবারে অ-সক্রিয় সুতরাং বর্তমানে যে সমস্ত নাইট গার্ড (পাহারাদার) আছে তাদেরকে বাদ দিয়ে নতুন করে পাহারাদার (নাইট গার্ড) নিয়োগ দিলে হইতবা এই চোরদের চুরির থাবা থেকে অন্তত রেহায় পেত দোকান মালিকেরা।
এবিষয়ে ডাকবাংলা দোকান মালিক সমিতির সদস্য বিসমিল্লাহ ট্রেডার্স এর মালিক রিন্টু মিয়া প্রতিবেদককে জানান, আমি প্রতি মাসে ১৪০ টাকা করে মাসহারা দিই।
তারপরও কয়েকদিন পরপরই বাজারের কোন না কোন দোকান চুরি হয়। চুরি হওয়া দোকানের পাশের দোকানেই বসে থাকে নাইট গার্ড। বাজারে নাইট গার্ড থাকতেও কিভাবে বারবার খেশারত গুনতে হয় নিরীহ দোকান মালিকদের।
এ সমস্ত নাইট গার্ডকে বাদ দিয়ে নতুন করে নাইট গার্ড নেওয়ার আহবান তিনার।
এবিষয়ে দোকান মালিক সমিতির সভাপতি আঃ রহমান কামাল প্রতিবেদককে জানান, ডাকবাংলা বাজারের নবি উদ্দিন ষ্টোর নবির দোকান থেকে নগদ ৪ হাজার টাকা ও ৫ হাজার টাকার সিগারেট চুরি হয়েছে।
এই নয় হাজার টাকা নাইট গার্ডদের কাছ থেকে নিয়ে তাকে দেওয়ার ব্যবস্থা করবো এবং জরুরি ভিত্তিতে মিটিং ডেকে পরবর্তীতে কি হবে তা আপনাদের জানানো হবে।
এবিষয়ে উত্তর নারায়নপুর ত্রিমহনী চাউল কল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আক্তার ভান্ডারী প্রতিবেদকে জানান, আমরা খুব দ্রুত একটা মিটিং কল করবো।
কারণ আমাদের নৈশপ্রহরী কম,আলোচনা সাপেক্ষে নৈশপ্রহরী বৃদ্ধি করতে হবে। তাহলে এ ধরনের সমস্যায় কাউকে পড়তে হবে না।
দোকান চুরি হওয়া ব্যক্তি যে,প্রতি মাসে ১’শত করে টাকা মাসহারা দেন। সে এখন ক্ষতি গ্রস্থ তাকে আপনার চাউল কল মালিক সমিতির পক্ষ্য থেকে কিছু ক্ষতি পূরন দিবে কিনা এবিষয়ে জানতে চাইলে তিনি প্রতিবেদককে বলেন,আমাদের এ ধরণের কোন নিয়ম নেই।
করণ পূর্বেও এই নৈশপ্রহরীরা এক ট্রাক চাউল উদ্ধার করেছিল তাদের তো তখন কোন পুরুষ্কার স্বরুপ কিছুই দেওয়া হয় নি।
এবিষয়ে ডাকবাংলা পুলিশ ক্যাম্প ইনচার্জ মোকলেছুর রহমান প্রতিবেদককে জানান, আসলে দোকান চুরির বিষয়টি দুঃখজনক।
সোমবার সন্ধ্যার পরে ডাকবাংলা বাজার দোকান মালিক সমিতি এবং নাইট গার্ডদের সাথে বসার কথা ছিল।
কিন্তু প্রতিদিনের ন্যায় আজও বৃষ্টি হওয়ার কারণেই বসতে পারি নি।
এটা আগামীকাল কাল যে কোন একসময় তাদের সাথে বসবো।
চোর চক্র যারাই হোক না কেন তাদের চিহ্নিত করে দ্রুত আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির ব্যবস্থা করবো।