টেকনাফের বধ্যভূমি স্বাধীনতার ৪৯ বছর ধরে অরক্ষিত
জিয়াবুল হক, টেকনাফ :
বাংলাদেশ স্বাধীনতার পর ৪৯ বছর পার হলেও সংরক্ষণের উদ্যোগ নেয়নি কোন সরকার। ফলে অরক্ষিত হয়ে পড়ে আছে টেকনাফের একমাত্র শহীদ বধ্যভূমি। হারিয়ে যাচ্ছে স্বাধীনতা রক্ষার জন্য প্রাণ দেওয়া সেই সব শহীদদের স্মৃতির শেষ চিহ্ন।
জানা যায়, স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় রাজাকারদের সহযোগিতায় পাকি বাহিনীর সদস্যদের হাতে বিভিন্ন কায়দায় নির্যাতনে নিহত হন টেকনাফের অসংখ্য মুক্তিকামী মানুষ। পাক বাহিনীর হাতে হত্যার পর মরদেহ পুঁতে রাখা হয়েছিল সেখানে। স্বাধীনতার ১০ বছর পর ১৯৮১ সালে টেকনাফ অলিয়াবাদ বিত্তহীন সমবায় সমিতির উদ্যোগে বধ্যভূমি সংরক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। বধ্যভূমিতে পাকা স্তম্ভ চারপাশে পাকা দেয়াল নির্মাণসহ ৩টি স্তম্ভ নির্মাণ করা হয়। যা এখনো কালের সাক্ষী হিসেবে অনেকটা ভঙ্গুর অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দীর্ঘদিন যাবত অবহেলায় পড়ে আছে টেকনাফের অরক্ষিত শহীদ বধ্যভূমি। সেখানে পাশে রয়েছে চুপারি ব্যবসায়ীদের চুপারি, চা, পান, বাদাম বিক্রেতাদের দোকান। এছাড়াও মুক্তিযুদ্ধে কালিন সময় নিহতদের স্মৃতিবিজড়িত খবর স্থানটি সংরক্ষণ না করায় নতুন প্রজন্মের কাছে অগোচরেই রয়ে গেছে এ অঞ্চলের শহীদদের আত্মত্যাগের ইতিহাস।
সুত্রে জানা যায়, বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭১ সালের ১৮ ডিসেম্বর ক্যাপ্টেন বিজয় সিংয়ের নেতৃত্বে মিত্রবাহিনী টেকনাফে আসার পরবর্তী মুক্তিযোদ্ধারা মিত্রবাহিনীর সহায়তায় ঐতিহাসিক এই বধ্যভূমিটি আবিষ্কার করেন। এখান থেকেই ২৮ জন বীর মুক্তিযোদ্ধার ছিন্নভিন্ন দেহাবশেষ উদ্ধার করে বর্তমান টেকনাফ পৌর কবরস্থান সংলগ্ন ঈদগাহ মাঠে সমাহিত করা হয়েছিল।
কক্সবাজার জেলা সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের সেক্রেটারি কমরেড গিয়াস উদ্দীন জানান, টেকনাফের শহীদ বদ্যভুমি কবরস্থানটি গত বছর জেলার একটি প্রতিনিধি দল পরিদর্শন করেছেন। আগামী নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস জানাতে এটি রক্ষণাবেক্ষণ করা জরুরি। বিষয়টি জেলা প্রশাসককে অবগত করা হবে।