নোয়াখালী, ফেনী ও কুমিল্লা এখনো বন্যার পানিতে ভাসছে
টানা ভারী বর্ষণ ও ভারতের ত্রিপুরা থেকে নেমে ঢলের পানি আসা এখনো অব্যাহত রয়েছে। বি-বাড়িয়া, সিলেট, মৌলভী বাজার জেলায় বন্যার পরিস্থিতির উন্নতি হলেও কুমিল্লা, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর ও কক্সবাজারের বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে।
পানিতে এখনো নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। অনেক এলাকায় ত্রাণ পৌঁছানো যাচ্ছে না। গতকাল আরো ৫ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। নদনদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানিবাহিত রোগ বাড়ছে। বন্যা পরিস্থিতি যেসব এলাকায় উন্নতি হচ্ছে সেখানে বন্যার ক্ষত দিন দিন ফুটে উঠছে। এ দিকে ভারী বর্ষণ ও পদ্মার পানি বাড়তে থাকায় যশোরের বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। অনেক এলাকার বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন থাকায় মানুষের ভোগান্তি বাড়ছে।
কুমিল্লায় প্লাবিত হচ্ছে নতুন এলাকা
কুমিল্লা প্রতিনিধি জানান, কুমিল্লায় গোমতী নদীর পানি কমলেও প্লাবিত হচ্ছে নতুন এলাকা। গোমতীর বিপদসীমার ৫৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে এখনো পানি প্রবাহিত হচ্ছে। কয়েক দিন আগে নদীর পানি বিপদসীমার ১৩০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছিল। এদিকে স্বস্তিতে নেই দুর্যোগপূর্ণ এলাকার মানুষজন। গেল কয় দিনে সড়কের অবকাঠামো নষ্ট হওয়া এবং কাঁচাঘর ভেঙে পড়ায় মেরামত নিয়ে দুশ্চিন্তা পেয়ে বসেছে।
সরজমিনে ঘুরে বড়িচং উপজেলার ভরাসার, ইছাপুরা, মহিষমারা ও বাকশিমুল এলাকায় পানি কিছুটা কমেছে। তবে অন্যান্য এলাকায় পানি স্থিতিশীল রয়েছে। আদর্শ সদর উপজেলার শিমড়া, বলেশ্বর রামপুর, ভুবনঘর এলাকার মানুষজন জানিয়েছেন, আগামী দিন দুয়েক আরো একটু নিচের দিকে নামবে পানি। তবে স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরে আসতে অন্তত সপ্তাহখানেক সময় লাগবে। এদিক বুড়িচং ও ব্রাহ্মণপাড়ার পর পাশের উপজেলা দেবিদ্বারের বিভিন্ন এলাকা নতুন করে প্লাবিত হচ্ছে।
নোয়াখালী অফিস জানায়, নোয়াখালীতে বন্যার পরিস্থিতি আরো অবনতি ঘটেছে। ভারত থেকে ধেয়ে আসা ঢলের পানি ও ভারী বর্ষণে জেলা শহর মাইজদী, নোয়াখালী পৌরসভা ও জেলার প্রধান বাণিজ্যকেন্দ্র চৌমুহনী শহরসহ জেলার ৮টি উপজেলার প্রায় শত ভাগ বাড়িঘর পানিতে তলিয়ে গেছে। এরই মধ্যে গত সপ্তাহে চার দিন বৃষ্টি বন্ধ থাকায় পানি কিছুটা কমতে শুরু করে। কিন্তু গতকাল সোমবার রাত থেকে ভারী টানা বর্ষণ শুরু হয়। এতে বাড়িঘরে পানি বৃদ্ধি পায়। নোয়াখালী আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানা যায়, গত ২৪ ঘণ্টায় ৯৪ মিলি বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়।
জেলার কোথাও কোনো আশ্রয়কেন্দ্র নেই। বন্যার্তদের কিছু মানুষ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আশ্রয় নেন। বেশির ভাগ মানুষ রয়েছে গ্রামে । রাস্তাঘাট ডুবে যাওয়ায় ত্রাণসামগ্রী তাদের দেয়া যাচ্ছে না। শুধু প্রধান সড়কের পাশে আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে সরকারি ও বেসরকারিভাবে সাহায্য দেয়া হচ্ছে। গ্রামে বসতবাড়িতে থাকা লাখ লাখ মানুষ সাহায্য পাচ্ছে না। তাদের মধ্যে খাদ্যের সঙ্কট দেখা দিয়েছে। এসব মানুষ অর্ধাহারে অনাহারে মানবেতর জীবনযাপন করছে। বিশুদ্ধ পানি সঙ্কট দেখা দিয়েছে। ফলে ডায়রিয়া আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ।